গরুর ক্ষুরা রোগের ভ্যাকসিন।গবাদি পশুর ভাইরাস জনিত রোগ কি?

আজকের এই পোস্টে আপনাদেরকে যেন হবে যে গরুর চিকিৎসা?গরুর মুখে ঘা হলে করণীয় কি?গবাদি পশুর ভাইরাস জনিত রোগ কি কি? জানাবো আজকের এই পোস্টে।

গরুর ক্ষুরা রোগের ভ্যাকসিন।গবাদি পশুর ভাইরাস জনিত রোগ কি?

গরুর চিকিৎসা

পশুর জন্য ছোঁয়াচে প্রকৃতিক ভাইরাস জনিত রোগের মধ্যে খোঁড়া রোগ অন্যতম। গরু, মহিষ, ছাগল,ভেড়া,হরিণ ও হাতিশহ বিভক্ত ঘোড়া বিশিষ্ট প্রাণীর এ রোগ হতে পারে। ছয় মাস বয়সে নিজের রোগটি মোরগ আকারে দেখা যায়। বাংলাদেশের সব ঋতুতে খোঁড়া রোগ দেখা দিল বর্ষার শেষে এ রোগের প্রাদুভাব বেশি।


এই রোগটি হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। জিব্বা, দাঁতের মাড়ি, সম্পূর্ণ মুখ, পায়ের ক্ষুরের মাঝে ঘা বা খতের সৃষ্টি হয়। কখনো বা ওলানে ফোসকা পড়ে। পশু ঘোরাতে থাকে এবং মুখে ঘা বা ক্ষতের কারণে খেতে কষ্ট হয়। অল্প সময়ে পরশু দুর্বল হয়ে পড়ে।

এর রোগের গর্ভবতী গভীর প্রায়ই গর্ভপাত ঘটে। দুধ আলু গাভীর দুধ উৎপন্ন মারাত্মকভাবে হাঁস পায়। বয়স্ক গরুর মৃত্যুহার কম হলেও আক্রান্ত বাছুরকে বাঁচিয়ে রাখা খুব কঠিন। অর্থাৎ 6 মাসের নিচে আক্রান্ত বাছুর 95% মারা যায়।

গরুর মুখে ঘা হলে করণীয় কি

গবাদি পশুর শরীরে অথবা পায়ে অথবা মুখে যে কোন স্থানে ঘা হয়ে থাকে তাহলে শুকানোর জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। তাই আপনারা গরুর শরীরের কোন স্থানে যদি ঘা হয়ে থাকে তাহলে সেই ঘা শুকানোর ওষুধ সম্পর্কে যারা জানতে এসেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এই তথ্যগুলো উপস্থাপন করলাম।


পটাশিয়াম পার্ট অক্সাইড অথবা পটাশিয়াম মিশ্রিত পানি দিয়ে গরুর সেই ক্ষতস্থানে ধুয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেখানে ব্যবহার করার মাধ্যমে অনেক সময় ঘা শুকিয়ে যায় এবং গরুর সুস্থতা অনুভব করে। যেহেতু গবাদি পশুদের ভাষা প্রকাশের কোন মাধ্যম নেই সেহেতু তাদের সমস্যা হয়ে থাকলে তারা বিভিন্ন লক্ষণের মাধ্যমে এ বিষয়গুলো বুঝিয়ে থাকে।

আপনি যদি একজন সফল খামারি হয়ে থাকেন অথবা আপনার যদি এই বিষয়ে পূর্বে অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে অবশ্যই সেই অভিজ্ঞতা আলোকে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে নিজেরাও যেমন করতে পারবেন তেমনি ভাবে একজন পশু চিকিৎসকের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে।

তবে প্রাথমিক অবস্থায় যদি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাটাই সবার চাইতে ভালো হবে। কারণ ইন্টারনেট ভিত্তিক এই তথ্যগুলো হয়তো এখনো দেখে নিতে পারবেন অথবা গুরুর লক্ষণ অনুযায়ী সেগুলো মিলিয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে পারবেন।

কিন্তু যখন লক্ষণের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়গুলো অথবা ওষুধের সংমিশ্রণের সঙ্গে যদি এগুলো খারাপ না খায় তখন দেখা যাবে যে তা গুরুর জন্য ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে। তাই আপনারা যখন কোন গরুর লালন পালন করবেন তখন প্রাথমিক অবস্থায় কোন বিষয় বুঝতে না পারলে সরাসরি চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সরে জমি নিয়ে বিষয়গুলো দেখাবে এবং সে অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট প্রদান করবে।

তবে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে ডাক্তার আপনার রোগের লক্ষণ দেখে যে ওষুধগুলো প্রদান করবে অথবা যে বিষয়গুলো বলবে সেগুলো আপনাদের ভালো মতো বুঝে নিতে হবে। কারণ পরবর্তীতে সেই একই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকলে আপনারা সেই ওষুধ বাজার থেকে কিনে এনে ব্যবহার করতে পারবেন।


এক্ষেত্রে আপনাকে আলাদা করে ডাক্তারের ভিজিট প্রদান করা লাগছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গরুকে পশু হাসপাতালে টেনে নেওয়া যাওয়া সম্ভব হয় না। ডাক্তারকে ভিজিট দিয়ে আনিয়ে গরুর সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে।

গবাদি পশুর ভাইরাস জনিত রোগ কি কি

লাম্পি স্কিন ডিজিজঃ চিকিৎসা, ঔষধ ও ভ্যাকসিন। লাম্পি স্কিন ডিজিজ গরুর জন্য একটি ভয়ংকর ভাইরাস জনিত রোাগ। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সব জায়গায় গবাদি পশু এলএসডি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগ খামারের জন্য বড় ধরণের ক্ষতির কারণ।

বর্তমানে একটি খামার কে অর্থনৈতিকভাবে লোকসান এনে দেওয়ার জন্য এফএমডি বা ক্ষুরা রোগের চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর রোগ হিসাবে বোভাইন এফিমেরাল ফিভার গবাদিপশুর একটি ভাইরাস জনিত সংক্রামক রোগ।

বোভাইন এফিমেরাল ফিভার আকস্মিক হয় এবং তিন দিন স্থায়ী থাকে বলে এ রোগকে তিন দিনের জ্বর বা থ্রি ডেজডত8গ সিকনেস বলে। এ রোগে আক্রান্তের হার ৫-১০০% এবং মৃত্যুর হার ২%। রক্ত শোষক কীট-পতঙ্গ আক্রান্ত প্রাণী হতে সুস্থ পাণিতে ভাইরাস ছড়ায়। প্রধানত মশা, ডাঁশ, মাছি প্রভৃতি এই

গরুর ক্ষুরা রোগের ভ্যাকসিন

গরু, মহিষ ও বাছুর: ২ মি.লি. ডিপ গ্লুটিয়াল মাংসপেশীতে
ছাগল ও ভেড়া : ১ মি.লি. গ্লুটিয়াল মাংসপেশীতে
১ম ভ্যাকসিনেশন: ৩-৪ মাস বয়স এবং এর পর থেকে
বুস্টার: প্রাথমিক ভ্যাকসিনেশন-এর ১-১.৫ মাস পর
রি-ভ্যাকসিনেশন: প্রতি ৪-৬ মাস পর পর।
অথবা রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান-এর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার্য


কোন ভ্যাকসিনই ১০০ % রোগ প্রতিরোধ করতে পারে না, যেমন মানুষের পক্স, করোনা ইত্যাদি। ও.আই.ই. এর গাইড লাইন অনুযায়ী ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিন যদি ৭৫% পর্যন্ত রোগ প্রতিরোধ করে তাকে একটি স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ভ্যাকসিন বলা হয়।

ফিল্ড ট্রায়াল রিপোর্ট এ দেখা গেছে ক্ষুরাভ্যাক্স ৮০% এর বেশি গরুকে প্রতিরক্ষা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৪০৮,৭৬৫ টি গরুকে ক্ষুরাভ্যাক্স দেয়া হয়েছে এবং ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক।

১ম বছরে
প্রাথমিক ভ্যাকসিনেশন : ৩-৪ মাস বয়স এবং এরপর থেকে (৭০ টাকা)।
বুস্টার : প্রাথমিক ভ্যাক্সিনেশন-এর ১ মাস পর (৭০ টাকা)।
রি-ভ্যাকসিনেশন : বুস্টার-এর পর প্রতি ৪ মাস পর পর (৭০ টাকা X৩=২১০ টাকা) ।
মোট খরচ=৩৫০ টাকা ।

২য় বছর থেকে ৩টি ভ্যাকসিনে ২১০ টাকা খরচ হবে।
ষাঁড়ে একবার ক্ষুরারোগ হলে ৫-১৫ কেজি ওজন কমে যেতে পারে। মাংস হিসাবে যার মূল্য ৫০০০ টাকার বেশি হবে।

ক্ষুরারোগে ২০% দুধ উৎপাদন কমলেও ৫ কেজি দুধ দেয় এমন গাভীতে বছরে ক্ষতি
দৈনিক ক্ষতি ৫ কেজি X ০.২=১ কেজি
বছরে ৬ মাস দুধ দেয় এমন গাভীতে ক্ষতি

৬ মাসে ক্ষতি =৬ X৩০X১=১৮০ কেজি
আর্থিক ক্ষতি= ১৮০ X ৫০=৯০০০ টাকা (প্রতি কেজি দুধের দাম ৫০ টাকা হিসাবে ধরা হয়েছে )
তাই খামারী অবশ্যই লাভবান হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url