৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ(৩০টি রোজা ৩০টি ফজিলত)।

ইসলামের খুঁটি পাঁচটি। তারমধ্যে রোজা হলো তৃতীয়। রোজা এমন একটি ইবাদত, যা অন্য সকল ইবাদতের চেয়ে ভিন্ন। আত্মশুদ্ধির জন্য রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রমজানের ৩০ রোজার ফজিলত সম্পর্কে মহা-গ্রন্থ আল কুরআন এবং হাদিসে বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে।

৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ(৩০টি রোজা ৩০টি ফজিলত)।


এরই ভিত্তিতে প্রামাণ্য তথ্যের সমাহার ঘটিয়ে আমরা জানতে চেষ্টা করবো রমজানের ৩০ দিনের ৩০টি ফজিলত সম্পর্কে।

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস:

আরো পড়ুন:ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ জেনে নিন।

১. রমজান মাসের আগমন:
হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যখন রমজান মাস আসে, তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদেরকে শেকল দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

২. রমজান মাসের রোজার ফজিলত:

হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘সকল আমলই আমার জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দেবো, তবে রোজা ব্যতীত। কারণ রোজা আমার জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দেবো।’ ” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “রোজা এবং কুরআন দু’জন সুপারিশকারী। রোজা বলে, ‘হে আমার রব! আমি তাকে দিনের বেলায় খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত রেখেছি, তাই তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করো।’ আর কুরআন বলে, ‘হে আমার রব! আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, তাই তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করো।’ ” (সুনান আত-তিরমিযী)

৩. রমজানের শেষ দশকে তাহাজ্জুদ:
হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও احتسابের সাথে রমজানের শেষ দশক রাত জেগে ইবাদত করে, তার জন্য পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

৪. রমজানের শেষ রাত (লাইলাতুল কদর):
হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকের যেকোনো বিজোড় রাতে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

৫. রমজানের রোজা ভাঙার ফজিলত:
হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে ইফতার করায়, তার জন্য রোজাদারের সমপরিমাণ পুণ্য লেখা হবে, রোজাদারের পুণ্য কিছুই কমবে না।” (সুনান আত-তিরমিযী)

উল্লেখ্য: এটি রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে কিছু হাদিসের সংক্ষিপ্তসার। আর

৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ

কুরআন:

সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত ১৮৩: "হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা পرهیزগার হও।"

হাদিস:

আরো পড়ুন:ফরজ গোসল কয়টি ও কি কি

 জানুনহজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "রমজান মাস এসেছে, এর সাথে রয়েছে রহমত, মাগফিরাত এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুযোগ।" (সুনান আন-নাসাঈ)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি ঈমান ও احتسابের সাথে রমজান মাসের রোজা রাখে, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

রমজানের ৩০ রোজার ফজিলত:
  • পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ: রমজান মাসের রোজা পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফের মাধ্যম।
  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: রমজান মাস জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুযোগ করে দেয়।
  • জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ: রমজান মাস জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়।
  • রহমত ও মাগফিরাত: রমজান মাস রহমত ও মাগফিরাতের মাস।
  • পরহেজগারী অর্জন: রমজান মাস পরহেজগারী অর্জনের মাধ্যম।
  • শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা: রমজান মাস শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য উপকারী।
  • সামাজিক বন্ধন দৃঢ়: রমজান মাস সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে।
উল্লেখ্য: রমজান মাসের ৩০ রোজা রাখার মাধ্যমে একজন মুসলিম

দলিল:
  • কুরআন: সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত ১৮৩-১৮৭; সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৩৫; সূরা আন-নিসা', আয়াত ১২৪; সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৮৯; সূরা আল-মু'মিনুন, আয়াত ১-১১; সূরা আল-ফাতহ, আয়াত ২৯।
  • হাদিস: সহীহ বুখারী ও মুসলিম; সুনান আত-তিরমিযী; সুনান আন-নাসাঈ; সুনান ইবনে মাজাহ।
উপসংহার:

রমজান মাসের ৩০ রোজা রাখা একজন মুসলিমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে কিতাব

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে অনেক বই রয়েছে। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই:

"রমজানের ফজিলত" - মুহাম্মাদ ইউসুফ কান্ধলভি

"রমজান মাসের আমল" - মুহাম্মাদ জাকারিয়া কান্ধলভি

"রমজানের রোজা ও তার ফজিলত" - মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ খান নদভী

"রমজান মাসের ফজিলত ও আমল" - মুহাম্মাদ সালিহ মুঞ্জেরী

আরো পড়ুন:জানাজার নামাজের নিয়ম জেনে রাখুন কাজে আসবে।

"রমজানের সওগাত" - মুহাম্মাদ আব্দুল রহিম কাশ্মীরী

এই বইগুলোতে রমজান মাসের ফজিলত, রোজার নিয়ম-কানুন, রমজানের বিশেষ আমল, লাইলাতুল কদরের فضیلত ইত্যাদি বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

এছাড়াও আরও কিছু বই উল্লেখ করা হলো:
  • "রমজানের মহাত্ম্য" - আবুল হাসান আলী নদভী
  • "রমজান মাসের আমল ও আহকাম" - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
  • "রমজান মাসের ফজিলত ও আমল" - মুহাম্মাদ ইদ্রিস কান্ধলভি
  • "রমজান মাসের রোজা ও তার আহকাম" - মুহাম্মাদ তাকি উসমানী
  • "রমজান মাসের ফজিলত ও আমল" - মুহাম্মাদ লুৎফুর রহমান ফারুকী
আপনি আপনার পছন্দ ও জ্ঞানের স্তর অনুযায়ী যেকোনো একটি বই পড়তে পারেন।

কিছু টিপস:
  • বই কেনার আগে বইটির রিভিউ পড়ে নিন।
  • বইটির লেখক সম্পর্কে জেনে নিন।
  • বইটির ভাষা ও লেখার ধরণ আপনার কাছে বোধগম্য কিনা তা নিশ্চিত করুন।

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজান মাস হলো ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ 'রোযা' পালনের মাস। এ মাসটি হিজরী বর্ষের নবম মাস। রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম।

রমজানের গুরুত্ব:
  • রোযা ফরয: রমজান মাসে রোযা রাখা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম।
  • আত্মসংযম ও ঈশ্বরভীতি: রোযা রাখার মাধ্যমে মানুষ আত্মসংযম ও ঈশ্বরভীতি লাভ করে।
  • দান-খয়রাত: রমজান মাসে দান-খয়রাতের প্রচলন বেশি।
  • কুরআন মাজীদের মাস: রমজান মাসে পবিত্র কুরআন মাজীদ নাজিল হয়েছিল।
  • লাইলাতুল কদর: রমজান মাসের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।

আরো পড়ুন:মাশাআল্লাহ কখন বলতে হয় জানতে পারেন।

রমজানের ফজিলত:
  • পাপের ক্ষমা: রমজান মাসে রোযা রাখার মাধ্যমে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল পাপের ক্ষমা লাভ করা সম্ভব।
  • জান্নাত লাভ: রোযাদারদের জন্য জান্নাতে 'রায়ান' নামক একটি বিশেষ দরজা রয়েছে।
  • দোয়া কবুল: রমজান মাসে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: রমজান মাসে রোযা রাখার মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।
  • আত্মশুদ্ধি: রমজান মাস আত্মশুদ্ধি ও নতুন করে জীবন শুরু করার একটি সুযোগ।
রমজান মাসকে কাজে লাগানোর উপায়:
  • নামাজ: রমজান মাসে নামাজের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
  • কুরআন তেলাওয়াত: রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াতের প্রচলন বেশি।
  • দান-খয়রাত: রমজান মাসে দান-খয়রাতের মাধ্যমে অভাবীদের সাহায্য করা উচিত।
  • দোয়া: রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া করা উচিত।
রমজান মাস হলো আল্লাহর অশেষ রহমত ও বরকতের মাস। এই মাসকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url