সপ্তাহে কোন কোন দিন রোজা রাখা সুন্নত বিস্তারিত জানুন।
মহান আল্লাহ মানবজাতি ও জিনজাতিকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই আমাদের উচিত, জীবনের প্রতিটি সময় এমনভাবে অতিবাহিত করা, যাতে তা ইবাদতে গণ্য হয়। আজকে আমরা জানব মুমিনের সাপ্তাহিক কিছু বিশেষ আমল সম্পর্কে, যেগুলোর প্রতি রাসুল (সা.) বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন।
সপ্তাহে কোন কোন দিন রোজা রাখা সুন্নত
সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নত।
আরো পড়ুন:রোজা রাখা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি?বিস্তারিত জানুন।
কারণ:
- হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখো।" (তিরমিযী)
- ফজিলত: সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে।
- এই দু'দিনে আমলনামা পেশ করা হয়।
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দু'দিনে রোজা রাখতেন।
- এতে গুনাহ মাফ হয় এবং জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
অন্যান্য দিনের রোজা:
- শুক্রবার: শুক্রবার একা রোজা রাখা মাকরুহ। তবে, বৃহস্পতিবারের সাথে রেখে শুক্রবার রোজা রাখা সুন্নত।
- শনিবার: শনিবার রোজা রাখা কিছু সাহাবা (রাঃ) করতেন। তবে, এ বিষয়ে কোন স্পষ্ট হাদিস নেই।
- রবিবার: রবিবার রোজা রাখা মাকরুহ।
- আশুরা: আশুরার রোজা রাখা সুন্নত।
- শা'বানের মধ্য দিন: শা'বানের মধ্য দিন (১৫ তারিখ) রোজা রাখা সুন্নত।
- শাওয়ালের ছয়টি রোজা: শাওয়াল মাসের ঈদের পর ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত।
তথ্যসূত্র:
সম্পর্কিত খবর রমজানে পোড়া তেলের ইফতারি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রোজাদার: [ভুল URL সরানো হয়েছে]
বিভিন্ন প্রকার নফল রোজার পরিচয় ও ফজিলত: [ভুল URL সরানো হয়েছে]িভিন্ন-প্রকার-নফল-রোজার-পরিচয়-ও-ফজিলত
কোন কোন দিন রোজা রাখা ভালো
সুন্নত রোজা:
- সপ্তাহে: সোমবার ও বৃহস্পতিবার
- মাসিক:
- মহররমের ৯ ও ১০ তারিখ
- শা'বানের ১৫ তারিখ
- শাওয়ালের ঈদের পর ৬টি রোজা
- অন্যান্য:
- আশুরা (মহররমের ১০ তারিখ)
- ঈদের দিনের আগের দিন (আরাফাতের দিন)
মুস্তাহাব রোজা:
প্রতি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ
প্রতি সপ্তাহে দু'দিন (কোন কোন ইমামের মতে)
আরো পড়ুন:রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া জানুন ।
কোন সন্দেহ থাকলে আলেম-উলামাদের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
কারণ:
- হাদিস: বিভিন্ন হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দিনগুলোতে রোজা রাখার فضائل বর্ণনা করেছেন।
- ফজিলত: এই দিনগুলোতে রোজা রাখার অনেক ফজিলত রয়েছে।
- গুনাহ মাফ হয়
- জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি পায়
- আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়
তথ্যসূত্র:
সম্পর্কিত খবর রমজানে পোড়া তেলের ইফতারি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রোজাদার: [ভুল URL সরানো হয়েছে]
বিভিন্ন প্রকার নফল রোজার পরিচয় ও ফজিলত: [ভুল URL সরানো হয়েছে]
সোমবার রোজা রাখার ফজিলত
সোমবার রোজা রাখার বেশ কিছু ফজিলত রয়েছে।
আরো পড়ুন:৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ(৩০টি রোজা ৩০টি ফজিলত)।
হাদিস:
- হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখো। কারণ এই দু'দিনে আমলনামা পেশ করা হয়।" (তিরমিযী)
- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "সোমবার রোজা রাখলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়।" (তিরমিযী)
ফজিলত:
- আমলনামা পেশ: সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমলনামা পেশ করা হয়। এই দিনে রোজা রাখলে গুনাহ মাফের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
- জান্নাতের দরজা খোলা: সোমবার রোজা রাখলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়।
- আল্লাহর রহমত: সোমবার রোজা রাখলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।
- সপ্তাহের প্রথম দিন রোজা রাখা
- পরবর্তী সপ্তাহের জন্য আল্লাহর রহমত লাভের মাধ্যম
বিঃদ্রঃ:
- সোমবার রোজা রাখার জন্য কোন নির্দিষ্ট নিয়তের প্রয়োজন নেই।
বছরে কত দিন রোজা রাখা হারাম
বছরে পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম:
- ঈদুল ফিতর: ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
- ঈদুল আযহা: ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
- আইয়েমে তাশরিক: ঈদুল আযহার পরবর্তী তিন দিন (১১-১৩ জিলহজ) রোজা রাখা হারাম।
কারণ:
- হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তিন দিন রোজা রাখা হারাম: ঈদের দিন, ঈদুল আযহার দিন এবং তাশরিকের তিন দিন।" (মুসলিম)
- কারণ: এই দিনগুলোতে খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ-উৎসব পালন করা হয়। রোজা রাখা এই উদ্দেশ্যে বাধা সৃষ্টি করে।
বিঃদ্রঃ:
- যদি কেউ ভুলবশত এই দিনগুলোতে রোজা রেখে ফেলে, তাহলে তার কাফফারা আদায় করা واجب।
- কাফফারা হলো:
- 60 জন মিসকিনকে খাওয়ানো
- প্রত্যেক মিসকিনকে এক সের খাদ্য (যেমন: গম, চাল, খেজুর) দান করা
- 60 জন মিসকিনকে এক মাসের রেশন (বাজার মূল্য অনুযায়ী) দান করা
তথ্যসূত্র:
সম্পর্কিত খবর রমজানে পোড়া তেলের ইফতারি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রোজাদার: [ভুল URL সরানো হয়েছে]
বিভিন্ন প্রকার নফল রোজার পরিচয় ও ফজিলত: [ভুল URL সরানো হয়েছে]
রাসুল সাঃ সোমবার কেন রোজা রাখতেন
আরো পড়ুন:জানাজার নামাজের নিয়ম জেনে রাখুন কাজে আসবে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সোমবার রোজা রাখার কারণ :
- জন্মদিন: হাদিসে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সোমবার জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই তিনি এই দিনটির শুকরিয়া আদায় ও আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য সোমবার রোজা রাখতেন।
- নবুওয়ত: আরেকটি হাদিসে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সোমবার নবুওয়ত লাভ করেছিলেন। তাই তিনি এই দিনটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতেন এবং রোজা রাখতেন।
- আমলনামা পেশ: সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমলনামা আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দু'দিন রোজা রেখে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত প্রার্থনা করতেন।
- অন্যান্য ফজিলত: সোমবার রোজা রাখার আরও অনেক ফজিলত রয়েছে।
- জান্নাতের দরজা খোলা থাকে।
- গুনাহ মাফ হয়।
- আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা যায়।
বিঃদ্রঃ:
সোমবার রোজা রাখা ওয়াজিব নয়, তবে এটি একটি সুন্নত।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সপ্তাহে নিয়মিত দু'দিন (সোম ও বৃহস্পতি) রোজা রাখতেন।
শারীরিকভাবে সক্ষম না হলে রোজা রাখা ওয়াজিব নয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url