শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ত,ণিয়ম,কয়টি জেনে নিন।

শবে বরাতের রোজা কয়টি, সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে। শবে বরাতের রোজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনি শবে বরাতের রোজা রাখতে পারেন। শবে বরাতের রোজা কয়টি এবং শবে বরাতের রোজার নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। শবে বরাতের রোজা কয়টি? তা নিচে তুলে ধরা হলো।


শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ত,ণিয়ম,কয়টি জেনে নিন।

শবে বরাতের রোজা কয়টি

শবে বরাতের রোজা রাখার ব্যাপারে বিভিন্ন হাদিস থেকে ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা পাওয়া যায়।
১) ১৫ শাবানের রোজা:
হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, "পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ।" (ইবনে মাজা, হাদিস- ১৩৮৪)

২) আইয়ামে বিজের রোজা:
প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বিজ বলা হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা রাখা সারাবছর রোজা রাখার সমান।" (বুখারি: ১১৫৯, ১৯৭৫)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, "আমার বন্ধু রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে তিনটি অসিয়ত করেছেন—এক. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুই. দুই রাকাত চাশতের নামাজ পড়া, তিন. ঘুমের আগে বিতরের নামাজ পড়া।" (সহিহ বুখারি: ১১৭৮)

৩) শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা:
হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, শাবান মাসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অধিকহারে রোজা রাখতেন। যেন তিনি গোটা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন। (তিরমিজি – ১৫৫, ১৫৬, ১৫৯)

উপরোক্ত হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়:
  • শবে বরাতের দিন (১৫ শাবান) রোজা রাখা সুন্নত।
  • আইয়ামে বিজের (১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখাও সুন্নত।
  • শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার ফজিলতও অনেক।
সুতরাং, আপনি নিম্নলিখিত যেকোনো একটি পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন:
  • শুধুমাত্র ১৫ শাবানের রোজা রাখতে পারেন।
  • ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ (আইয়ামে বিজ) তিনটি রোজা রাখতে পারেন।
  • পুরো শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখতে পারেন।
কোন পদ্ধতিটি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে তা আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি ও ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
মনে রাখবেন, রোজার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতা ও তাঁর ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগ দেওয়া।

শবে বরাতের রোজার নিয়ত

শবে বরাতের রোজার নিয়ত করার সময় নিম্ন বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি:

১) রোজার নির্দিষ্ট নিয়ত:
"নাওয়াইতু আন আছুমা গাদান মিন শাহরি শাবানা লিল্লাহি তা'আলা"
অর্থ: "আমি আগামীকাল শাবান মাসের রোজা আল্লাহর জন্য রাখার ইচ্ছা করছি।"

২) শবে বরাতের রোজার জন্য বিশেষ নিয়ত:
"নাওয়াইতু আন আছুমা গাদান লিলাতিল বারাআতি মিন শাহরি শাবানা লিল্লাহি তা'আলা"
অর্থ: "আমি আগামীকাল শাবান মাসের শবে বরাতের রোজা আল্লাহর জন্য রাখার ইচ্ছা করছি।"

৩) নিয়ত করার সময়:
রোজার পূর্বে রাতের যেকোনো সময়ে নিয়ত করা যেতে পারে।
তবে, সাহাবা (রা.) সূর্যাস্তের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময়ে নিয়ত করতেন।
সবচেয়ে ভালো সময় হলো ইফতারের পর থেকে সাহরির পূর্ব পর্যন্ত।

৪) নিয়ত করার স্থান:
নিয়ত করার জন্য কোন নির্দিষ্ট স্থান নেই।
যেখানেই থাকুন, মনে মনে নিয়ত করে রোজা রাখা যাবে।

৫) নিয়ত করার উচ্চারণ:
নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট।
তবে, মুখে উচ্চারণ করলে তা আরও ভালো।

আরো পড়ুন:

উল্লেখ্য, শবে বরাতের রোজা রাখা সুন্নত। তবে, যদি কেউ রোজা না রাখে তাহলে তার কোন গুনাহ হবে না।

শবে বরাতের রোজার ফজিলত

শবে বরাতের রোজার ফজিলত অপরিসীম। হাদিসে শরিফে এর অনেক গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে।

কিছু ফজিলত:
  • পাপের মাগফিরাত: এই রাতে আল্লাহ তায়ালা অগণিত পাপী বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।
  • নসিবের লিখন: এই রাতে আগামী এক বছরের জন্য মানুষের নসিব লিখিত হয়।
  • দোয়া কবুল: এই রাতে আল্লাহর কাছে বিনীত প্রার্থনা করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: এই রাতে জাহান্নাম থেকে অসংখ্য বান্দা মুক্তি পান।
  • রহমতের বর্ষণ: এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত বর্ষিত হয়।
  • আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ: এই রাতে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের বিশেষ সুযোগ থাকে।
হাদিসে শরিফে শবে বরাতের রোজার ফজিলত সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে:

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি শবে বরাতের রোজা রাখবে এবং শবে কদরের রোজা রাখবে, তার জন্য দু'ঈদের মধ্যবর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।" (তিরমিযী: ৭৩৯)

হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত যখন আসবে, তখন তোমরা রাত জেগে ইবাদত করবে এবং দিনে রোজা রাখবে। কেননা এই রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ পাক দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, 'কে আছে ক্ষমাপ্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছে রিযিক প্রার্থী, আমি তাকে রিযিক দান করব। কে আছে বিপদে মুম্বাদ, আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তি দেব।' এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের ডাকতে থাকেন।" (ইবনে মাজাহ: ১৩৮৮)
উল্লেখ্য, শবে বরাতের রোজা রাখা সুন্নত। তবে, যদি কেউ রোজা না রাখে তাহলে তার কোন গুনাহ হবে না।

শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ত

১) সাধারণ নিয়ত:

"নাওয়াইতু আন আছুমা গাদান মিন শাহরি শাবানা লিল্লাহি তা'আলা"

অর্থ: "আমি আগামীকাল শাবান মাসের রোজা আল্লাহর জন্য রাখার ইচ্ছা করছি।"

২) শবে বরাতের রোজার জন্য বিশেষ নিয়ত:

"নাওয়াইতু আন আছুমা গাদান লিলাতিল বারাআতি মিন শাহরি শাবানা লিল্লাহি তা'আলা"

অর্থ: "আমি আগামীকাল শাবান মাসের শবে বরাতের রোজা আল্লাহর জন্য রাখার ইচ্ছা করছি।"

নিয়ত করার সময়:
  • রোজার পূর্বে রাতের যেকোনো সময়ে নিয়ত করা যেতে পারে।
  • তবে, সাহাবা (রা.) সূর্যাস্তের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময়ে নিয়ত করতেন।
  • সবচেয়ে ভালো সময় হলো ইফতারের পর থেকে সাহরির পূর্ব পর্যন্ত।
নিয়ত করার স্থান:
  • নিয়ত করার জন্য কোন নির্দিষ্ট স্থান নেই।
  • যেখানেই থাকুন, মনে মনে নিয়ত করে রোজা রাখা যাবে।
নিয়ত করার উচ্চারণ:
  • নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট।
  • তবে, মুখে উচ্চারণ করলে তা আরও ভালো।
উল্লেখ্য, শবে বরাতের রোজা রাখা সুন্নত। তবে, যদি কেউ রোজা না রাখে তাহলে তার কোন গুনাহ হবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url